নিজস্ব প্রতিবেদক :
(Last Updated On: )দক্ষ, উৎকর্ষ ও বিজ্ঞানমুখী নতুন প্রজন্ম গড়ে তোলার লক্ষ্যে জাতীয় বিশ্বিবিদ্যালয়ের সমন্বিত পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হয়েছে। ইতিমধ্যে এটি বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়েছে। আমরা চাই, আমাদের আগামী প্রজন্ম হোক দক্ষ, উৎকর্ষ, মানবিক, দেশপ্রেমিক এবং বিশ্বমানের। তাদের চিন্তা চেতনায় গভীর দেশপ্রেম মমত্ববোধ থাকতে হবে। বিজ্ঞান চেতনা ও সৃজনশীলতায় এই প্রজন্ম অপূর্ব শক্তি নিয়ে বেড়ে উঠুক- এটি আমাদের সম্মিলিত চাওয়া।
আজ শনিবার রাজধানীর একটি সম্মেলন কক্ষে ‘বিশেষ সিনেট অধিবেশন-২০২৩’ এ সিনেট চেয়ারম্যানের অভিভাষণে এসব কথা বলেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান। সিনেট চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি অধিবেশনের সভাপতিত্ব করেন।
অধিবেশনে ভিসি গত ২৪ জুন অনুষ্ঠিত সিনেটের ২৫তম অধিবেশনের পর থেকে এ পর্যন্ত গৃহীত বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রমের বিভিন্ন বিবরণ সংক্ষিপ্তভাবে তুলে ধরেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- পরীক্ষা কার্যক্রম, অন ক্যাম্পাস অনার্স কোর্সে ভর্তি কার্যক্রম, পোস্ট গ্রাজুয়েট ডিপ্লোমা (পিজিডি) কোর্সের ক্লাশ শুরু, সহপাঠ কার্যক্রম, কারিকুলাম উন্নয়নে ৩১টি কর্মশালা, মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে প্রশিক্ষণ ও মোটিভেশন, শিক্ষাবৃত্তি প্রদান, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ, একাডেমিক ও ফিজিক্যাল মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়ন, আইসিটি মাস্টার প্ল্যান, শিক্ষক প্রশিক্ষণে মাস্টার প্ল্যান, পরীক্ষা ব্যবস্থাপনায় ইএমএস প্রবর্তনসহ বহুবিধ কার্যক্রম।
সিনেট অধিবেশনে ভিসি বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষার ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর শিক্ষার উৎকর্ষতা নিশ্চিত করার অভীষ্ট লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। যে দেশের অনুপ্রেরণার নাম বঙ্গবন্ধু, রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, সুকান্ত, লালন- সে দেশকে অন্যকোনো পরাশক্তির পরামর্শ ব্যতিরেকেই আত্মমর্যাদায় নিজেদেরকে বলীয়ান করার সক্ষমতা রয়েছে। গণতান্ত্রিক অভিযাত্রায় বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। দারিদ্র্য বিমোচন থেকে শুরু করে শিক্ষার উন্নয়ন ও উৎকর্ষতায় জাতীয় বিশ্বিবিদ্যালয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ হবে আত্মমর্যাদার সেরা এক জাতিরাষ্ট্র।
ড. মশিউর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণের লক্ষ্য নিয়ে আমাদের প্রধানমন্ত্রী নিরলস পরিশ্রম করছেন দেশ গঠনে। বাংলাদেশের আত্মমর্যাদা বৃদ্ধির লক্ষ্যে তার পরিশ্রম, সাধনা এবং দৃঢ় অবস্থান আমরা লক্ষ্য করছি। আমাদের প্রজন্মকে গড়ে তোলায় প্রধানমন্ত্রীর রয়েছে সুনির্দিষ্ট ভিশন। ডিজিটাল বাংলাদেশের পথ ধরে স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে তিনি স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট গভর্নেন্স, স্মার্ট সোসাইটির কথা বলেছেন। বঙ্গবন্ধু কন্যার এই ‘স্মার্ট সিটিজেন’ গড়ে তোলার লক্ষ্যে জাতীয় বিশ্বিবিদ্যালয় বদ্ধপরিকর। আমরা চাই, বাংলাদেশের এই তরুণ জনগোষ্ঠী হয়ে উঠুক দেশ ও বিশ্বের আগামী দিনের অনন্য সম্পদ।
শিক্ষার মানোন্নয়নে বিশ্বিবিদ্যালয়ের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে উপাচার্য ড. মশিউর রহমান বলেন, এই প্রজন্মকে আলোকিত করে গড়ে তোলায় শ্রেণি কক্ষে নেয়া, পাঠদানে আধুনিক সকল ব্যবস্থাপনায় আনা, আর বই পড়ায় অভ্যস্ত করে জ্ঞান প্রবাহের সম্মিলনে নিয়ে আসা আমাদের একান্ত চাওয়া। প্রতিবন্ধকতা আছে, সমাজে শ্রেণি বিভাজন আমাদের শিক্ষার্থীদেরকেও বঞ্চিত করছে। এটিও এক রূঢ় বাস্তবতা। কিন্তু প্রযুক্তি ও জ্ঞানে সমান সুযোগ সৃষ্টি করে আমরা সমতার পৃথিবীতে আনতে চাই এই জনগোষ্ঠীকে। এরা যেন পৃথিবীতে সমান অংশীদারত্ব নিশ্চিত করার নতুন বাসিন্দা হয়। নতুন পৃথিবীতে জীবনের নবতর আদর্শ, নিষ্ঠা, প্রেম ও মমতার বাঁধনে মানবিক হোক আমাদের সন্তানেরা।
বিশেষ এ সিনেট অধিবেশনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মানোন্নয়নের বিষয়ে বিভিন্ন পরামর্শ ও দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য তুলে ধরেন সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এমপি, সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ, সংসদ সদস্য শহীদুজ্জামান সরকার, সংসদ সদস্য আরমা দত্ত, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন, ইউজিসির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম, পিএসসির সাবেক সদস্য অধ্যাপক ড. শরীফ এনামুল কবীর, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, ঢাকা বিশ্বিবিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক শাহজাহান মিয়া, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এ কে এম আফতাব হোসেন প্রামাণিক, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো. সাবিরুল ইসলাম, ময়মনসিংহের বিভাগীয় কমিশনার উম্মে সালমা তানজিয়াসহ ১৬ জন সিনেট সদস্য।