বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন চুক্তির মাধ্যমে দেশে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হলো বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম।
ইনসিনারেশন পদ্ধতি অর্থাৎ বর্জ্য পুড়িয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনে যে পরিমাণ ময়লা-আবর্জনা প্রয়োজন হবে তা সরবরাহ করলে শহরে ময়লার সমস্যা থাকবে না বলেও জানান মন্ত্রী।
তিনি আজ রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে আমিন বাজারে ৪২ দশমিক ৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা জানান।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করেই বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। কার্যক্রম শুরু হওয়ার ১৮ মাসের মধ্যেই বিদ্যুৎ উৎপাদনে যাবে চীনা কোম্পানি। এ ব্যাপারে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, চীনা কোম্পানি নিজ ঝুঁকিতে প্ল্যান্ট স্থাপন, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ করবে। সিটি করপোরেশন প্রয়োজনীয় জমি ও নিয়মিত বর্জ্য সরবরাহ করবে। আর উৎপাদিত বিদ্যুৎ ক্রয় করবে বিদ্যুৎ বিভাগ।
মোঃ তাজুল ইসলাম জানান, শুধু ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন নয় দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ এবং চট্টগ্রামসহ দেশের সকল সিটি কর্পোরেশন, বিভাগীয় ও জেলা শহর এমনকি পৌরসভাগুলোতেও বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
মন্ত্রী আরও জানান, যেসব বিভাগী বা জেলা শহর অথবা পৌরসভা প্রতিদিন ৬শো টন ময়লা আবর্জনা সরবরাহ করতে পারবে তারা বিদ্যুৎ বিভাগের সাথে সমন্বয় করে সরাসরি বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন যেতে পারবে।
এসময় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন- ডিএনসিসি মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম বলেন, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন দেশে প্রথমবারের মতো বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে যাচ্ছে।
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্পের জন্য ডিএনসিসি রাজধানীর আমিনবাজার এলাকায় ৩০ একর জমি বরাদ্দের ব্যবস্থা করেছে। আতিকুল ইসলাম বলেন, ৪২.৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন প্রকল্পটিতে প্রতিদিন সর্বমোট ৩ হাজার মেট্রিক টন কঠিন বর্জ্য ব্যবহার করা হবে।
তিনি বলেন, প্রকল্পটিতে কাঁচামাল হিসেবে নগরীর কঠিন বর্জ্য ব্যবহার করার ফলে এটি নগরীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি সুস্থ পরিবেশ ও প্রতিবেশের জন্যও সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মোঃ হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম, স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত চায়নার রাষ্ট্রদূত লি জিমিং।
পরে, স্থানীয় সরকার বিভাগ, বিদ্যুৎ বিভাগ, উত্তর সিটি কর্পোরেশন এবং চায়না মেশিনারি ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশনের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
উল্লেখ্য, দেশে প্রথমবারের মতো উৎপন্ন করতে যাচ্ছে সরকার। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আওতাধীন আমিন বাজার এলাকায় চায়না মেশিনারি ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন (সিএমইসি) ৪২ দশমিক ৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন এ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করবে। ব্যয় হবে প্রায় ১৫ হাজার ৩২৫ কোটি টাকা। প্রতিদিন তিন হাজার টন বর্জ্য লাগবে। প্রতি কিলোওয়াট বিদ্যুতের দাম পড়বে ১৮ দশমিক ২৯৫ টাকা ।
সবারবাংলা/এসআই