আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্য শুনে মনে হয়, আওয়ামী লীগকে রাজপথে দেখে তারা ভীত হয়ে পড়েছে। আর পুরনো গাড়ি যেমন মাঝে মাঝে স্টার্ট না দিলে একেবারে বন্ধ হয়ে যায়, বিএনপির ক’দিন পরপর দেওয়া কর্মসূচিগুলো হচ্ছে সেরকম।
ওমরাহ হজ পালন শেষে বুধবার (২৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় দেশে ফিরেই রাজধানীর মিন্টো রোডে সরকারি বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে বিএনপির আন্দোলন-কর্মসূচি নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
ড. হাছান বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকুক আর না থাকুক, আমরা রাজপথের দল। আজ সারাদেশে লাখে লাখে আওয়ামী লীগ কর্মীরা রাজপথে নেমেছে দেখে মির্জা ফখরুল সাহেবদের বক্তব্য শুনে মনে হয়, তারা ভীত হয়ে পড়েছেন।’
বিএনপির অভিযোগ ‘আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র হত্যা করেছে’ এটি খণ্ডন করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপিই দেশে গণতন্ত্র হত্যাকারী। তাদের জন্মটাই অগণতান্ত্রিকভাবে। বঙ্গবন্ধুর লাশের ওপর, মানুষের লাশের ওপর পাড়া দিয়ে জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেছিল। হাজার হাজার সেনাসদস্যকে বিনাবিচারে হত্যা করেছে। ২২ হাজার আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে।’
‘সেই ধারাবাহিকতায় খালেদা জিয়ার জ্ঞাতসারে তারেক রহমানের নির্দেশনায় আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব নিশ্চিহ্ন করতে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা পরিচালনা করে ২৪ জনকে হত্যা ও পাঁচশ’রও বেশি মানুষকে আহত করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন জনসভায় বোমা মেরে, হামলা করে নেতাকর্মী ও নিরীহ মানুষ হত্যা করা হয়েছে’ উল্লেখ করেন তিনি।
দেশকে জনকল্যাণ রাষ্ট্রে রূপান্তর করতেই সর্বজনীন পেনশন
এ সময় জাতীয় সংসদে সদ্য পাস হওয়া সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা বিল ২০২৩ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী হাছান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার দেশকে পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোর মতো জনকল্যাণ রাষ্ট্রে রূপান্তর করতেই এই বিল পাস করেছে।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি যাই বলুক, দেশের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি আজ বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ এবং সারাবিশ্বে প্রশংসিত। আমাদের মাথাপিছু আয় বহু আগেই পাকিস্তানকে এবং করোনার মধ্যে ভারতকেও ছাড়িয়ে গেছে। ১৪ বছর আগে দেশ বিশ্বে ৬০তম অর্থনীতির দেশ ছিল, এখন আমরা ৩৫তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ।’
তথ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ফ্যাব প্রতিনিধিদের সাক্ষাৎ
এর আগে সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে চলচ্চিত্র অঙ্গনে সদ্য আত্মপ্রকাশকারী ফিল্ম অ্যালায়েন্স বাংলাদেশ (ফ্যাব) প্রতিনিধিবর্গ সাক্ষাৎ করেন। চলচ্চিত্রকার নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, তারিক আনাম খান, গাউসুল আলম শাওন, পিপলু আর খান, নূর সাফা জুলহাস, রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত আলোচনায় অংশ নেন।
বৈঠক শেষে মন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘দেশের চলচ্চিত্র শিল্প এবং সাংস্কৃতিক জাগরণকে এগিয়ে নেওয়ার বিষয়ে ফিল্ম অ্যালায়েন্স প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। চলচ্চিত্র শিল্পকে এগিয়ে নিতে সরকার স্বল্পসুদে ১০০০ কোটি টাকার ঋণ সুবিধা চালু করেছে, চলচ্চিত্র শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্ট করেছে, অনুদানের অর্থ ও সংখ্যা বৃদ্ধি করেছে।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আগে গ্রামে-গঞ্জে, শহরের পাড়ায় পাড়ায় সংস্কৃতিচর্চা হতো, নাটক-যাত্রাপালা হতো, সেগুলো আবার ফিরিয়ে আনতে সাংস্কৃতিক জাগরণ দরকার। কারণ, সংস্কৃতিচর্চা মানুষ ও সমাজকে মৌলবাদ ও পশ্চাৎমুখিতা থেকে দূরে রাখে, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যায়।