মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনায় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী
স্বাধীনতাকে আমরা বিফল হতে দিতে পারি না

(Last Updated On: )

মহান স্বাধীনতা ও বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা ও সম্মাননা প্রদান করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। বৃহস্পতিবার রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যেমে সংবর্ধনা ও সম্মাননা প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় বসবাসরত এবং করপোরেশনের আওতাভুক্ত এলাকা থেকে প্রায় পাঁচ শত মুক্তিযোদ্ধা ভাতা উত্তোলনকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা ও প্রায়াত মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের সদস্যদের এই সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রায় পাঁচশোর অধিক মুক্তিযোদ্ধা এবং প্রায়াত মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের মাঝে সন্মাননা প্রদান করা হয়। দক্ষিণ সিটির মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক । এছাড়াও সাবেক মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, আওয়ামী লীগের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন এলাকার সংসদীয় আসনের সংসদ সদস্য এড. কামরুল ইসলাম, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, মনিরুল ইসলাম মনু, কাজী ফিরোজ রশীদ, হাজী মোহাম্মদ সেলিম, রাশেদ খান মেনন এবং সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য জিন্নাতুল বাকিয়া, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও মহানগরীর নেতৃবৃন্দ এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটির কর্মকর্তারা।

স্বাধীনতা কে আমরা বিফল হতে দিতে পারি না উল্লেখ করে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের সূতিকাগার আন্তর্জাতিক মানের হবে। যার কাজ এখনো চলছে। যাতে মানুষ শুধু বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নয়, পাকিস্তান আমলের ২৩ বছরে মুক্তির সংগ্রাম ও ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধ সম্বন্ধে জানতে পারবে। তিনি জানান, যত জায়গায় পাকহানাদার বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিবাহিনীর যুদ্ধ হয়েছে সবগুলো জায়গা সংরক্ষণ করা হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় যত বদ্ধভূমি ছিল সব গুলো আমরা সংরক্ষণ করছি।

নিজ বক্তব্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমি কোন মেয়ের না ব্যারিস্টার না সংসদ সদস্য না একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান আপনাদের সন্তান। মেয়র হিসেবে না আপনাদের সন্তান হিসেবে আপনাদের জন্য নগর ভবনের দরজা সব সময় খোলা।

জাপার কো: চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছিলাম। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিলো ক্ষুধা দারিদ্র মুক্ত সোনার বাংলা গড়ে তোলো । জাতির পিতার সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে তার কন্যা রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কাজ করে যাচ্ছেন। আমরা জাতীয় পার্টি বঙ্গবন্ধু কন্যার সহযোগী হিসেবে কাজ করছি। ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য ও ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেছেন, আজকে আমরা দেশের এত উন্নয়ন করছি, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে কিন্তু দুর্নীতি এত প্রবল আকার ধারণ করছে, উন্নয়নের ফসলগুলোকে দুর্নীতি খেয়ে ফেলছে। এই দেশকে গড়ার জন্য আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম উল্লেখ করে মেনন বলেন, আমাদের সামনে একটা চ্যালেঞ্জ ছিল। সেই চ্যালেঞ্জ এখনো আছে। এখনো দেশে ধর্ম নিয়ে রাজনীতি চলে। আমাদের লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশের মাটিতে ধর্ম নিয়ে কোনো রাজনীতি চলবে না। আজও সেই রাজনীতি বন্ধ হয়নি। জিয়াউর রহমান স্বাধীনতাবিরোধীদের দেশে এনেছিলেন, সংসদে জায়গা দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমরা যারা মুক্তিযোদ্ধা ছিলাম। আমাদের বয়স হয়ে গেছে। সেই গৌরবকে এগিয়ে নিয়ে যাবে নতুন প্রজন্ম। নতুন প্রজন্মকে সেই চেতনা লালন করতে হবে।

ঢাকা-২ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি ক্ষমতায় থাকবে এবং বিরোধীরা বিরোধী দলেই থাকবে। এই ধারা আমাদেরকে অব্যাহত রাখতে হবে। কামরুল ইসলাম বলেন, আমরা স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করেছিলাম। আমরা ৯ মাস সংগ্রাম করেছিলাম। কিন্তু এখনও একটা শক্তি স্বাধীনতাকে স্বীকার করতে চায় না। তারা মুজিবনগর সরকারকে এখনও মেনে নেয় না। আমরা মুক্তিযুদ্ধে যে শক্তির বিরুদ্ধে লড়েছিলাম, আজও আমাদের সেই শক্তির বিরুদ্ধে লড়তে হচ্ছে। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেছেন, শেখ হাসিনাকে কেউ ক্ষমতা থেকে সরাতে পারবে না। তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলতে থাকবে। কিন্তু আমরা এ ষড়যন্ত্রকে শেষ করতে চাই। এই ষড়যন্ত্র বারবার প্রতিহিত করতে চাই না। এজন্য ক্ষমতা ধরে রাখতে হবে। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলেই আমরা শান্তিতে ঘুমাতে পারবো, দুই বেলা ঠিক মতো খেতে পারবো।

সবারবাংলা/এসআই

Facebook Comments Box