ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর রকেট হামলায় নিহত ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজের প্রকৌশলী হাদিসুর রহমান আরিফের (৩৪) মরদেহ নিজ বাড়ি বরগুনার বেতাগী উপজেলার কদমতলা গ্রামে পৌঁছেছে। সোমবার (১৪ মার্চ) রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে লাশবাহী ফ্রিজিং গাড়িতে করে তার মরদেহ নিয়ে আসা হয়। এ সময় স্বজনদের আহাজারিতে এলাকার পরিবেশ ভারি হয়ে ওঠে।
এর আগে দুপুর বেলা ১২টা ২০ মিনিটে টার্কিশ এয়ারলাইনসের একটি কার্গো বিমান হাদিসুরের মরদেহ নিয়ে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে দুপুর ২টায় হাদিসুরের মরদেহ নিয়ে বরগুনার উদ্দেশ্য রওনা হন স্বজনরা। তার মরদেহ ফ্রিজিং গাড়িতে সংরক্ষিত থাকবে। আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টায় জানাজা শেষে তার দাফন সম্পন্ন হবে।
হাদিসুরের মরদেহ বাড়িতে আসার কথা শুনে দুপুর থেকেই আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু ও প্রতিবেশীরা তার বাড়িতে আসতে শুরু করেন। রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে তার মরদেহ বাড়িতে পৌঁছালে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজনরা। হাদিসুরের মা, বোন ও ভাইয়েরা বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। মরদেহ আসার আগেই সেখানে অবস্থান করেন বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুহৃদ সালেহীন।
হাদিসুরের খালাতো ভাই সোহাগ হাওলাদার বলেন, সকাল থেকে বিমানবন্দরে অপেক্ষা করেছি আমরা। দুপুরে ওর (হাদিসুর) লাশ আসে। হাদিসুরের সঙ্গে আমার ভালো সম্পর্ক ছিল। কয়েকদিন পরপর ভিডিও কলে আমাদের কথা হত। আমি এখন কার সঙ্গে কথা বলব।
বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুহৃদ সালেহীন বলেন, প্রকৌশলী হাদিসুরের মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। কোনো মা-বাবাকে যেন সন্তানের এমন মৃত্যু না দেখতে হয়। হাদিসুর ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। উপজেলা ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে হাদিসুরের পরিবারকে সব ধরনের সহায়তা করা হবে।
তিন বছর পর বৈঠকে বসছে ১৪ দল
দীর্ঘ তিন বছর পর বসছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় ১৪ দলীয় জোট। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বসেছিল জোটের শীর্ষ নেতাদের বৈঠক।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এ বৈঠক বসবে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান। তবে আমন্ত্রণ পেলেও বৈঠকে অংশ নেবে না জোটের শরিক বাংলাদেশ জাসদ।
১৪ দলীয় জোট বর্তমানে কার্যকর নয় দাবি করে জাসদের সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া বলেন, প্রধানমন্ত্রী ১৪ দলীয় জোটের নেতাদের ডেকেছেন শুনেছি। আমাকেও ফোন করা হয়েছিল। আমরা তো ১৪ দল কন্টিনিউ করার পক্ষে না। এটা এখন অতীত। জোটে বাকি যারা আছেন, তারা হয়তো কৌশলে কিংবা নগ্নভাবে চাটুকারিতে আছেন। আমরা যাচ্ছি না।
তিনি বলেন, ১৪ দলীয় জোট এখন অতীত। বর্তমানে এটার কোন ফাংশন নেই। দিবস উদযাপন করা তো ফাংশন না। যে কারণে এই জোট করা হয়েছে, সেটা এখন বাস্তবায়ন হয় না। সরকারে থেকে কে কীভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করবে সেটাই চলছে।
জোটের এক নেতা বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গণভবনে সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এরপর দীর্ঘদিন কোনো বৈঠক নেই। নির্বাচনের পরে আওয়ামী লীগ আমাদের তেমন গুরুত্ব দিচ্ছে না। দিবস ভিত্তিক কর্মসূচিতে আমাদের কর্মকাণ্ড সীমাবদ্ধ। এতে ঐক্যে চিড় ধরতে পারে। ঐক্য মজবুত করতে জোটের নেত্রীর সঙ্গে আমাদের বৈঠক গুরুত্বপূর্ণ।