শফিকুল ইসলাম :
(Last Updated On: )পবিত্র ঈদুল আজহার আর মাত্র কয়েকদিন বাকি আছে। ফলে শেষ মুুহুর্তে রাজধানীর ছোট বড় মার্কেটসহ সর্বত্রই চলছে বেচাকেনার ধুম। আজ ছিলো জুময়াতুল বিদা। ফলে যারা এতোদিন কিনাকাটা করতে পারেনি তারা সবাই কেনাকাটা সেরে ফেলেছেন।এতে রাজধানীর মার্কেট থেকে শুরু করে ফুটপাতগুলোকে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় ছিলো দেখার মতো।
জানা গেছে, বছরের সর্ববৃহৎ উৎসব ঈদুল ফিতরে সবাই কেনাকাটা করেন। দরিদ্র থেকে বিত্তবান পর্যন্ত সমাজের সর্বস্তরের মানুষের কাছে ঈদের আনন্দ ছড়িয়ে পড়ে নানা আঙ্গিকে। ফুটপাত থেকে ঝলমলে বিশাল শপিং মলে সর্বত্র ভিড় করেন সঙ্গতি অনুযায়ী সমাজের নানা শ্রেণীপেশার মানুষ। ঈদের আগে শেষ শুত্রবারে রাজধানীর বিপণিবিতানগুলো গমগম করছে ক্রেতার ভিড়ে। ঈদের দিন মনে রেখে নিজেকে সুন্দর করে সাজাতে বিপুল আগ্রহে ক্রেতারা কিনছে তাদের পছন্দের পোশাক, জুতা, স্যান্ডেল, কসমেটিকস, অলংকারসহ নানা সামগ্রী। ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়ে কী রাত কী দিন, বিক্রেতাদের দম ফেলার জো নেই। রমজান মাসে সারাদেশ যেন পরিণত হয়েছে ঈদ মার্কেটে। ঢাকার বাইরে বিভিন্ন শহর, শহরতলি আর মফস্বলেও চলছে একই অবস্থা। এ সময়েও নিতান্তই সখের বসে কেনা হচ্ছে কোটি কোটি টাকার পোশাক-পরিচ্ছদ। গুলশানের অভিজাত মার্কেট থেকে শুরু করে সদরঘাটের টংদোকানেও চলছে কেনাকাটার প্রচণ্ড ভিড়বাট্টা। আর তাতেই আনন্দিত বিক্রেতারা। তাদের আসল ঈদ যেন এখনই শুরু হয়ে গেছে। প্রতিদিন সব শ্রেণীপেশার ক্রেতায় মুখরিত হয়ে উঠছে মার্কেটগুলো। দরকষাকষি আর ক্রেতার ছোটাছুটিতে বেচাকেনা চলছে প্রায় বিরতিহীন। টাকা কোনো বিষয়ই নয়, পণ্য পছন্দ হলেই হাতে নিয়ে নিচ্ছেন ধনাঢ্য ক্রেতারা। পরিস্থিতি অনুকূলে থাকায় ব্যবসায়ীরা বিনিয়োগ করেছেন প্রচুর।
এদিকে, শুক্রবার সব মার্কেটেই ক্রেতার ভিড় ছিলো লক্ষ্যনীয়। বিশেষ করে রাজধানীর নিউমার্কেট, গাউসিয়া, চাঁদনিচক ও ধানমন্ডি হকার্স, ধানমন্ডি মিরপুর রোডের মার্কেটপাড়ার রাপা প্লাজা, মৌচাক, সানরাইজ প্লাজা, মেট্রো শপিংমল, এআর প্লাজা ও রাইফেলস স্কোয়ার, হাতিরপুলের ইস্ট্রার্ণ প্লাজা, বসুন্ধরা সিটি, মৌচাক মার্কেট, আনারকলি, এলিফ্যান্ট রোড, টুইন টাওয়ার, কর্ণফুলী গার্ডেন সিটি, পুরান ঢাকার বঙ্গবাজার, পীর ইয়ামেনি, গুলিস্তান মার্কেট, নাভানা টাওয়ার, চকবাজার, সদরঘাট, ভাসাবি, সপার্শ ওয়ার্ল্ডসহ গুলশান, বনানী ও উত্তরার বেশ কিছু মার্কেট, শপিংমল ও বুটিক হাউস এবং বিভিন্ন এলাকায় ফুটপাতের মার্কেটগুলোর সর্বত্রই আনন্দময় দৃশ্যপট। নতুন ডিজাইনের ও হাল ফ্যাশনের শাড়ি, জামা, পাঞ্জাবি, জুতা, প্রসাধন সামগ্রী, গহনাসহ নানা পণ্য কিনতে স্রতের মতো মানুষ এসেছে মার্কেটে মার্কেটে। মার্কেটগুলোতে তরুণ-তরুণী আর নারী ক্রেতাদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীতে আকারে বড় বিলাসবহুল মার্কেটের সংখ্যা প্রায় ২শ’। এসব মার্কেটের প্রতিটিতে ১শ’র বেশি দোকান রয়েছে। এছাড়াও দেড়শ’র ওপরে ছোট মার্কেটে প্রায় একশ’র মতো দোকান আছে। সমিতি জানিয়েছে, এ জরিপে সম্প্রতিক সময়ের রাজধানীর গুলশান, বনানী, বারিধারা, উত্তরা, মিরপুর, মোহাম্মদপুর, শ্যামলী, সদরঘাট, চকবাজার, মালিবাগ, শান্তিনগর, কাকরাইল, বেইলি রোড, বাড্ডাসহ বিভিন্ন এলাকার মার্কেটগুলো অন্তর্ভুক্ত। এছাড়া, ফুটপাত ও অতিক্ষুদ্র দোকানগুলোও রয়েছে।
অন্যদিকে ঈদ সামনে রেখে কোনো বেচাকেনা নেই রাজধানীর স্বর্ণের দোকানগুলোতে। এতে হতাশ ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীরা জানান, দাম বেশির কারণে দেশের স্বর্ণের বাজার মন্দা। এখন খুব বেশি দরকার না হলে কেউ আর স্বর্ণ কেনেন না।